প্রকাশের দিনেই বিতর্কের মুখে ঢাবি ছাত্রদলের হল কমিটি, উক্ত কমিটিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ১৮টি হলে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে ছাত্রদল। এতে মোট ৫৯৩ জন শিক্ষার্থী এই হল কমিটিতে পদ পায়। এর মধ্যে শুক্রবার রাত ৯টা পর্যন্ত নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, পদধারী-কর্মী এবং রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা রয়েছেন এমন সদ্য ছাত্রদলের কমিটিতে পদায়িত প্রায় ৪৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ দিকে এমন অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ঢাবি শাখা ছাত্রদল।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাবি শাখার দফতর সম্পাদক মল্লিক ওয়াসি উদ্দিন তামীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন হল শাখাসমূহের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কারো কারো বিষয়ে তথ্য গোপন রেখে সংগঠনে যুক্ত হওয়া এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে আনীত বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি বিস্তারিত তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. মাসুম বিল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. নাছির উদ্দিন শাওন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নূর আলম ভূঁইয়া ইমনকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস এবং সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন আজ এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন এবং আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে এই তদন্ত কমিটিকে লিখিত একটি প্রতিবেদন পেশ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে প্রায় ছাত্রদলের কমিটিতে স্থান পাওয়া ৪৬ জনের মতো ছাত্রলীগের রাজনৈতিক সঙ্গে জড়িত ছিল এমন বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সদ্য ছাত্রদলের কমিটিতে পদধারীদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ ওঠারা হলেন- অমর একুশে হল ছাত্রদলের সদস্য সচিব আব্দুল হামিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল কাদের, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নাহিদ হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমীন তায়েব। ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রদলের মো. আবিদ হাসনাত, যুগ্ম-আহ্বায়ক রাকিব হাসান ও যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ইমরান হোসেন। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম নাহিদ
এদিকে প্রায় ছাত্রদলের কমিটিতে স্থান পাওয়া ৪৬ জনের মতো ছাত্রলীগের রাজনৈতিক সঙ্গে জড়িত ছিল এমন বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সদ্য ছাত্রদলের কমিটিতে পদধারীদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ ওঠারা হলেন- অমর একুশে হল ছাত্রদলের সদস্য সচিব আব্দুল হামিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল কাদের, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নাহিদ হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমীন তায়েব। ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রদলের মো. আবিদ হাসনাত, যুগ্ম-আহ্বায়ক রাকিব হাসান ও যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ইমরান হোসেন। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম নাহিদ
হাজী মোহাম্মদ মুহসিন হল ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবুজার গিফারী ইফাত, যুগ্ম সদস্য সচিব রোমান মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জনি প্রমাণিক, যুগ্ম আহ্বায়ক মোয়াহ শাহরিয়ার অপু, যুগ্ম আহ্বায়ক মহিবুল হাসান আকন্দ এবং সদস্য আহমেদ জাবির মাহাম।
শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শাহরিয়ার লিয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক হাসনাথ তারিক জীম, যুগ্ম আহ্বায়ক জিন্নাহ চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সজীব হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাসেল হোসেন।
মাস্টার দ্য সূর্য সেন হল শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহিদুল আলম ফাহিম যুগ্ম আহ্বায়ক আতিক মণ্ডল ও যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক। বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাকিবুল হাসান রাকিব ও যুগ্ম আহ্বায়ক আরকানুল ইসলাম রূপক।
স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মুনতাহা মিথ ও সদস্য বাদশাহ বিন ফরহাদ আলভি। মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাজু শেখ, যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান ও যুগ্ম আহ্বায়ক আকাশ মাহমুদ। জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রদলের সদস্য ধ্রুব রায়।
বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব জান্নাতুল ফেরদৌস পুতুল। কবি সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক জাকিয়া সুলতানা আলো। রোকেয়া হল শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আনিকা বিনতে আশরাফ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এমএম মমিতুর ইসলাম পিয়াল, যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তফা হোসেন লিখন, যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল নোমান, যুগ্ম আহ্বায়ক সাদমান সাকিব শাওন, যুগ্ম আহ্বায়ক রোমান সরকার, যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ মিসবাহ উদ্দীন ও সদস্য ইমতিয়াজ আহমেদ।
অতীতে সরাসরি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সরাসরি যুক্ত ছিলেন এমন ৬ জনের নাম এখন পর্যন্ত পেয়েছে গণমাধ্যম। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পেয়েছেন, এর আগে তারা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিট ও ছাত্রলীগের হয়ে নির্বাচনের সমন্বয় দলেও ছিলেন। জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হল ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক নিতু রানী সাহা, নিতু ছাত্রলীগের সনজিত-সাদ্দাম কমিটির হল শাখা ছাত্রলীগের উপ-গণযোগাযোগ সম্পাদক ছিলেন। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক রাকিবুল হাসান সৌরভ, তিনি সনজিত-সাদ্দাম কমিটির বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের সহ-সভাপতি পদে ছিলেন। সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হান্নান সবুজ, তিনি সনজিত-সাদ্দাম কমিটির হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের মতো একটি গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠনের কমিটি গঠন প্রক্রিয়াতে একই পদের জন্য একাধিক যোগ্য কর্মী থাকার কারণে সবাইকে তার কাঙ্ক্ষিত পদে দায়িত্ব দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে নাই। আমাদের হল কমিটিসমূহ গঠনের ক্ষেত্রে এরকম অনেক কঠিন ও কষ্টকর সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হয়েছে। আমরা আশা করব সবাই দল ও আদর্শের প্রতি নিষ্ঠাবান থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকবেন।’
সাংগঠনিক ব্যবস্থাগ্রহণের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নবপ্রকাশিত কমিটিতে পদায়িত কেউ যদি অনৈতিক কার্যক্রমে যুক্ত থাকেন কিংবা সদস্য ফরম ও কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় তথ্য গোপন করে থাকেন তবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্তপূর্বক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’