আগামী জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে চলতি মাসেই একটা ঘোষণা আসতে পারে।
ইউরোপীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে তার কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় ড. ইউনূস বলেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছেন তারা। কমিশনের প্রস্তাবনাগুলো নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
‘নির্বাচন সংস্কার কমিশনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাবনা রয়েছে যা নির্বাচনের আগে বাস্তবায়ন করা জরুরি, যাতে পুরনো সমস্যাগুলোর পুনরাবৃত্তি না ঘটে,’ বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকার যদি এখনই নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে, তাহলে তা পুরনো ধাঁচের নির্বাচন হবে এবং পূর্বের সমস্যাগুলো ফিরে আসবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়তে নতুন নীতি ও নতুন প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রয়োজন।
‘রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠানে খুবই আগ্রহী। আমরাও নির্বাচন অনুষ্ঠানে আগ্রহী,’ উল্লেখ করেন তিনি।
ড. ইউনূস কূটনীতিকদের জানান, তিনি জনগণকে সরকারের দুটি দায়িত্ব—নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার—সম্পর্কে অবহিত করার চেষ্টা করছেন।
তিনি বলেন, ১৫টি ভিন্ন কমিশন কাজ করছে এবং সরকার চলতি মাসের শেষের দিকে অথবা জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে এসব কমিশনের প্রতিবেদন পেতে আশাবাদী।
‘নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার সম্পন্ন হলে আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকব। এটিই আমাদের লক্ষ্য... দুটি প্রক্রিয়া একই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে,’ বলেন ড. ইউনূস।
মতবিনিময় সভার শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত, কারণ এটি বিজয়ের মাস। “আপনাদের সবাইকে একসঙ্গে পাওয়া একটি বিশেষ উপলক্ষ,’ বলেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, এটি বাংলাদেশের প্রতি—রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং নৈতিক—সমর্থন প্রদর্শন করে। তার মতে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কিছু অপরাজনৈতিক প্রচারণা এবং ভুল তথ্য প্রচার সত্ত্বেও দেশটিতে ঐক্যের দৃঢ় বোধ বিদ্যমান।
প্রধান উপদেষ্টা ইউরোপীয় কূটনীতিকদের সামনে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যাংকিং, অর্থনীতি এবং শ্রম খাতে সংস্কারের উদ্যোগগুলো তুলে ধরেন।