আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী রাষ্ট্র ইরান মুসলিমপ্রধান একটি দেশের পাঁচ লক্ষাধিক নাগরিককে নিজ ভূখণ্ড থেকে বিতাড়িত করেছে বলে জানা গেছে। সীমান্ত নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা রক্ষার দোহাই দিয়ে এই গণনির্বাসন কার্যক্রম চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইরান সরকারের দাবি, এই অভিবাসীরা অবৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশ করে থাকতেন এবং তাদের উপস্থিতি দেশের অর্থনীতি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যদিও মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এসব অভিবাসীদের মধ্যে অনেকেই শরণার্থী বা আশ্রয়প্রার্থী ছিলেন, যারা নিজ দেশে যুদ্ধ, দারিদ্র্য ও নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে এসেছিলেন।
স্থানীয় গণমাধ্যম ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সূত্র অনুযায়ী, বিতাড়িত ব্যক্তিদের অধিকাংশই আফগান নাগরিক। আফগানিস্তানে তালেবান শাসনের পর বহু মানুষ ইরানে পালিয়ে আসে, তবে সম্প্রতি ইরান সরকার কঠোর অভিবাসন নীতি গ্রহণ করে এবং ব্যাপক সংখ্যক অভিবাসীকে সীমান্ত পেরিয়ে নিজ দেশে ফিরিয়ে দেয়।
এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (UNHCR) বলেছে, শরণার্থীদের জোর করে ফেরত পাঠানো আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ। তাছাড়া, এই মানুষগুলোকে ফিরিয়ে দিলে তারা মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হতে পারেন।
ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের সিদ্ধান্ত সার্বভৌম অধিকার এবং এটি নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রয়োজনীয় ছিল। তবে মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই পরিস্থিতির প্রতি দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এখনও অনেক বিতাড়িত ব্যক্তি সীমান্ত অঞ্চলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসেবার অভাবে তারা মারাত্মক সংকটে পড়েছেন বলে প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে।
ইরান সরকারের এই সিদ্ধান্ত মুসলিম বিশ্বে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ও আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করে বিষয়টির সমাধান হওয়া উচিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। শরণার্থী সংকট ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এখন সময়ের দাবি।