ঢাকা | বঙ্গাব্দ

মৌলভীবাজারের আবদুল মান্নানের বাগানের পাকা রাম্বুটান ফল

  • আপলোড তারিখঃ 26-07-2025 ইং
মৌলভীবাজারের আবদুল মান্নানের বাগানের পাকা রাম্বুটান ফল ছবির ক্যাপশন: সংগৃহীত

কৃষি ডেস্ক:



মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আকবরপুরে মো. আবদুল মান্নানের বাগানে আছে নানা জাতের ফলের গাছ। বাগানটিকে বৈচিত্র্য আর সৌন্দর্য দিয়েছে রাম্বুটান ও পিনাট বাটারের মতো নতুন নতুন দেশি-বিদেশি ফল।


২০১৮ সালে বাগানটির যাত্রা শুরু। সম্প্রতি মান্নানের ফলবাগানে গিয়ে দেখা যায়, প্রাচীর দেওয়া স্থানটিতে টিলাজুড়ে সুনসান নীরবতা। কিছু চেনা-অচেনা পাখির ডাক ছাড়া আর কোনো শব্দ নেই। টিলার ঢালে ঢালে, সমতলে অনেক ধরনের গাছ। একদম পরিপাটি, সাজানো-গোছানো দাঁড়িয়ে আছে নানা জাতের ফলের গাছ। বাগানের কয়েকটি স্থানে টিলার ঢালুতে দেখা গেছে রাম্বুটানের গাছ। তাতে ডাল বোঝাই হয়ে ফল এসেছে। বেশির ভাগ ফল তখনো কাঁচা, তাই সবুজ রঙের। কিছু ডালে ফল পাকতে শুরু করেছে। অনেক ফল হলুদ হয়ে উঠেছে। কিছু ডালে লাল রঙের ফল হাসছে। এটি এই অঞ্চলে একটি নতুন ফল। অনেকেই রাম্বুটানের সঙ্গে পরিচিত নয়।



আবদুল মান্নান প্রথম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রায় চার বছর আগে দেশের বিভিন্ন স্থানের নার্সারি থেকে তিনি রাম্বুটানের চারা সংগ্রহ করেন। চারার দাম ৫০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত পড়েছে। রোপণের এক বছর পর থেকেই গাছে ফল আসতে শুরু করে। গত বছর ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে প্রায় ১০ হাজার টাকার রাম্বুটান বিক্রি করেছেন। এবার আরও বেশি টাকার রাম্বুটান বিক্রি করতে পারার আশা তাঁর। তাঁর বাগানে ২৫টি রাম্বুটানের গাছ আছে। এবার ১০ থেকে ১৫টি গাছে ফল এসেছে। ফলটি দেখতে খুবই সুন্দর, খেতেও সুস্বাদু। এলাকায় এটি নতুন ফল। ফল বাজারে নেওয়া লাগে না। পরিচিত লোকজনের মধ্যে যাঁরা জানেন, তাঁরা এসে বাগান থেকেই নিয়ে যান।


রাম্বুটান লিচু পরিবারের একটি ফল। সুস্বাদু এ ফলের আদি উৎস মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও এই ফল হয়ে থাকে। এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবে ফলটির চাষ হচ্ছে। মালয় ভাষায় ‘রামবুট’ শব্দের অর্থ হচ্ছে চুল। খোসার ওপর চুলের মতো হওয়ায় ফলটির এমন নামকরণ।



মান্নানের ফলবাগানে আছে পিনাট বাটার নামের আরেকটি ফল। পিনাট বাটার কিছুটা লম্বাটে ধরনের বরই ফলের মতো। গাছটিতে লাল রঙের ফল পেকে আছে। বিভিন্ন ডালে হালকা হলুদ রঙের ফুল ফুটেছে। বাগানে ১৩টি পিনাট বাটারের গাছ আছে। বছর তিনেক আগে এই পিনাট বাটারের গাছ লাগিয়েছিলেন। গত বছর থেকে ফল আসছে। গত বছর এক হাজার টাকার ফল বিক্রি করেন।


বাগানটির আয়তন ৫ একর ৪৪ শতাংশ। এর মধ্যে ৩২ শতাংশে ড্রাগন ফল চাষ করেছেন মান্নান। এর মধ্যে ৪০ হাজার টাকার ড্রাগন বিক্রি করেছেন। ড্রাগন ধারাবাহিকভাবে পাকছে, পাকা ফল বিক্রি করা হচ্ছে।



মান্নান জানান, তাঁর এই বাগানে ব্ল্যাক স্টোন, ব্রুনাই কিং, সূর্যমণি, আমেরিকান ম্যাংগো, আম্রপালি, কাটিমনসহ ২০ জাতের আম আছে। বাগানে প্রায় ৯০০ আমের গাছ আছে। এ বছর ৫৫ হাজার টাকার আম বিক্রি করেছেন। কাঁঠালগাছ আছে ১০০টি। এ বছর ৫৫ হাজার টাকার কাঁঠাল বিক্রি করেছেন। ১৮ থেকে ২০ হাজার আনারসের গাছ আছে। এবার আনারস বিক্রি করেছেন ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার। বাগানে আছে ৫৫টি লিচু ও ১৫টি জামগাছ। এ ছাড়া আছে জিংকসমৃদ্ধ লাল কলা, কমলা, দার্জিলিং মাল্টাসহ বিভিন্ন জাতের ফলের গাছ।


মান্নানের বাগানটিতে ছয়জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। মান্নানের দাবি, বছরে দেড় লাখ টাকার মতো খরচ হয়। সব খরচ বাদ দিয়ে বছরে দুই লাখ টাকার মতো থাকে তাঁর। যত দিন যাবে, ফলন বেশি হবে। বিক্রিও বাড়বে। ফলে আয় বাড়বে বলে তিনি মনে করেন। তাঁর ভাষায়, ‘এখনো বাগানে পাঁচ ভাগের মাত্র এক ভাগ গাছে ফল আসছে। আগামী বছরই ফল দ্বিগুণ হবে।’


মৌলভীবাজার সদর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নীরোজ কান্তি রায় প্রথম আলোকে বলেন, মান্নানের বাগানে দেশি-বিদেশি অনেক ফলের গাছ আছে। এটি একটি সম্ভাবনাময় ফলের বাগান।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ focusullapara

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
notebook

প্রস্তাবিত জুলাই সনদে নিরীক্ষা ও হিসাব বিভাগের পৃথকীকরণ বিষয়টি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে