ঢাকা | বঙ্গাব্দ

বিশেষ সর্তকর্তা জারি গোয়েন্দা সংস্থার, নাশকতার পরিকল্পনা আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের

  • আপলোড তারিখঃ 02-08-2025 ইং
বিশেষ সর্তকর্তা জারি গোয়েন্দা সংস্থার, নাশকতার পরিকল্পনা আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের ছবির ক্যাপশন: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর প্রায় এক বছর পার হলেও প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ফিরতে পারেনি আওয়ামী লীগ। জুলাই আন্দোলনে গণহত্যা চালানোসহ বিগত ১৬ বছরের শাসনামলে অনিয়ম-হত্যা, গুম-খুন, নির্যাতন, অর্থ বাণিজ্যসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো অপরাধে অন্তর্বর্তী সরকার দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। নিষিদ্ধ হওয়ার পরও দেশ ও বিদেশে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা ছদ্মবেশে তৎপর রয়েছে বলে গোয়েন্দা তথ্য থেকে জানা গেছে। 

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আশঙ্কা করছে, আসন্ন ৫ই আগষ্টকে কেন্দ্র করে সহিংসতার পরিকল্পনা রয়েছে দলটির। এ প্রেক্ষাপটে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বিশেষ সর্তকবার্তা দিয়েছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)।

বিশেষ শাখা আশঙ্কা করছে, ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়কে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের কিছু নেতাকর্মী অনলাইন ও অফলাইনে সংঘবদ্ধ প্রচারণার মাধ্যমে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে। ওই সময় সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় হামলা, বিশৃঙ্খলা, ভাঙচুর কিংবা সংঘবদ্ধ সহিংসতা ঘটানোর পরিকল্পনা থাকতে পারে বলেও সতর্ক করেছে এসবি।

এজন্য ২৮ জুলাই দেশের সব পুলিশ ইউনিটে চিঠি পাঠানো হয়েছে, যার প্রাপক তালিকায় রয়েছেন ডিএমপি কমিশনার, সিটি এসবি, বিভাগীয় উপ-পুলিশ কমিশনার, চট্টগ্রাম ও খুলনা স্পেশাল পুলিশ সুপারসহ সব জেলার পুলিশ সুপার। চিঠিতে ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট সময়কে ‘বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করে সারাদেশে বিশেষ নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, ‘ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ঘিরে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠনগুলো ১ জুলাই থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত দেশব্যাপী অনলাইন ও অফলাইনে উসকানিমূলক প্রচারণা, আন্দোলনে বাধা প্রদান কিংবা পরিস্থিতিকে সহিংস করে তোলার চেষ্টার আশঙ্কা রয়েছে।’

এই প্রেক্ষাপটে পুলিশ ইউনিটগুলোকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও যানবাহনের ওপর নজরদারি, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার এবং সাইবার গোয়েন্দা কার্যক্রম বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালে মোবাইল পেট্রল, মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়িতে তল্লাশি, বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন, বিমানবন্দরের আশপাশে নজরদারি জোরদার করারও নির্দেশ রয়েছে। একইসঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল, সাইবার পেট্রলিং এবং গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।

এ বিষয়ে পুলিশের বিশেষ শাখার একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যুবলীগ এবং নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী মাঠে না থাকলেও ‘ভার্চুয়াল স্কোয়াড’ গড়ে তুলেছে। তারা ফেসবুক, টেলিগ্রাম ও ইউটিউবভিত্তিক বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। অনেককেই হত্যার হুমকিও দিচ্ছে। এসব বিবেচনায় আগেই সর্তকবার্তা পাঠানো হয়েছে।’

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যেকোন ঘটনাকে ইস্যু বানিয়ে মাঠে নামার হুমকি দিচ্ছে। তারা বিভিন্ন পোস্ট ও বার্তার মাধ্যমে জুলাই আন্দোলনকারীদের প্রতি আক্রমণাত্মক মনোভাব প্রকাশ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলো এসব বার্তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানা গেছে।

এসব প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে এনে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির ষড়যন্ত্র করছে তারা। যারা দেশে-বিদেশে বসে এই পরিকল্পনায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাতির সাথে কোনো আপস করা হবে না।’


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ focusullapara

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
notebook

প্রস্তাবিত জুলাই সনদে নিরীক্ষা ও হিসাব বিভাগের পৃথকীকরণ বিষয়টি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে