লোডশেডিংয়ে সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প হুমকির মুখে। বন্যার পর পুরোদমে কাজ শুরু হতে না হতেদই দিনে গড়ে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে ব্যাহত হচ্ছে এ শিল্পের উৎপাদন। সেই সঙ্গে রঙ ও সুতার অনিয়ন্ত্রিত বাজারব্যবস্থায় চরম লোকসানের মুখে তাঁতিরা। তবে এ শিল্পের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে তাঁত বোর্ড।
সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, শাহজাদপুর, চৌহালীসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার মানুষের ঘুম ভাঙতো হাতে তৈরি তাঁত যন্ত্রের খট খট শব্দে। তবে আধুনিক যন্ত্র প্রযুক্তির যুগে এ যন্ত্রের স্থলে জায়গা দখল করে নিয়েছে ইলেকট্রিক তাঁত যন্ত্র বা পাওয়ারলুম। এর উৎপাদন ক্ষমতাও কয়েকগুণ বেশি। তবে বর্তমানে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিল্পের উৎপাদন ব্যবস্থা।
চলতি বছর দুদফা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে অসংখ্য তাঁত। এতে লোকসানের মুখে পড়েছে এর সঙ্গে জড়িত ৫ শতাধিক ব্যবসায়ী। বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠে যখন পুরোদমে কাজ শুরু হচ্ছিল পল্লিগুলোতে, ঠিক তখনই দিনে গড়ে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে ব্যাহত হচ্ছে এ শিল্পের উৎপাদন। প্রতি বছর শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে এ সময়টায় বাহারি সব শাড়ি তৈরিতে কর্মব্যস্ত থাকে প্রতিটি তাঁতপল্লি। কিন্তু বর্তমানে অলস সময় কাটাতে হচ্ছে শ্রমিকদের। সেই সঙ্গে দফায় দফায় রঙ ও সুতার দাম বৃদ্ধির কারণে চরম লোকসানের মুখে জেলার ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পটি।
আলামিন হোসেন নামে একজন তাঁত মালিক জানান, লোকসানের মুখে অনেক তাঁত ব্যবসায়ী ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। বন্ধ হয়ে গেছে অসংখ্য তাঁত কারখানা। এতে বেকার হয়ে পড়েছে অনেক শ্রমিক। এ শিল্পকে লোকসানের হাত থেকে রক্ষায় সরকাররিকে এগিয়ে আসতে হবে।
তাঁত বোর্ড, সিরাজগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত লিয়াঁজো অফিসার ইকরামুল হক বলেন, তাঁতিদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সুপারিশ আকারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। তাঁতশিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সবরকম পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সিরাজগঞ্জের ৫ উপজেলার তাঁত যন্ত্র আছে পাঁচ লাখের মতো। আর এ শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় ১২ লাখ মানুষ।