নিজস্ব প্রতিবেদক
এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ব্যানারে স্লোগান দিয়েছেন নেতাকর্মীরা। তারা শুধু স্লোগানই নয় নাচ, ঢাকঢোল ও উল্লাসও করেছেন অনেক সময় ধরে। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি।
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে তিনি বলেন, এনসিপির অফিসের সামনে এমন দৃশ্য। প্রশ্ন হলো, এটা কীসের ইঙ্গিত?
গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘ঢাকার রূপায়ণ টাওয়ারে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবস্থিত। সেখানে সম্প্রতি আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ব্যানারে শত শত নেতাকর্মী মিছিল করেছে। তারা ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু,’ ‘শেখ হাসিনার সরকার বার বার দরকার’—এসব স্লোগান দিয়েছে। শুধু স্লোগানেই শেষ নয়—নাচ, ঢাকঢোল ও উল্লাসও করেছে অনেক সময় ধরে। এনসিপির অফিসের সামনে এমন দৃশ্য। প্রশ্ন হলো—এটা কিসের ইঙ্গিত?’
তিনি বলেন, ‘মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে ছাত্রলীগ দাঁড়াতেও পারেনি। ১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের পর্যন্ত ঠেকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অথচ সেই ছাত্রলীগই হঠাৎ করে এত সংগঠিত হয়ে, এত সাহস নিয়ে এনসিপির অফিসের সামনে গিয়ে মিছিল করে, দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকে—এমনটা কি স্বাভাবিক? কিন্তু প্রশ্ন একটাই—এই মিছিল কার ইশারায়, কার অনুমতিতে আর কার উদ্দেশ্যে?’
তিনি আরও বলেন, ‘রূপায়ণ টাওয়ারে এনসিপির অফিসটি দুটি ফ্লোর জুড়ে বিস্তৃত এবং এর অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা ও ব্যবস্থাপনা রাজকীয় পর্যায়ের। দলের নেতারা এখানে বসেন এবং তাদের জন্য নির্ধারিত বসার স্থানসহ অন্য সুযোগ-সুবিধা বেশ ব্যতিক্রমধর্মী ও আরামদায়ক। নেতাকর্মীদের আনাগোনায় অফিসের সামনেই প্রায় সব সময় ভিড় লেগে থাকে। এই অফিসকে ঘিরে যেমন অনেক সুনাম রয়েছে, তেমনি রয়েছে সমালোচনাও।’
গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘যেখানে বঙ্গবন্ধু ভবন (৩২ নম্বর) ভেঙে ফেলা হয়েছে, সেখানে ছাত্রলীগের একজন নেতাও দাঁড়াতে পারেনি। সাধারণ মানুষ, যারা আওয়ামী লীগকে ভালোবাসে—এমনকি নারীরাও সেখানে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছে। এমনকি ২০২৫ সালের ১৫ আগস্টেও ছাত্রলীগ বা আওয়ামী লীগের কেউ সেখানে যেতে পারেনি, একজনও না। কোনো নেত্রীও না। সেই অবস্থায়, যেখানে ১৫ আগস্ট ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের এমন দুরবস্থা ছিল, সেখানে হঠাৎ সেপ্টেম্বর মাসে এমন কী ঘটল যে ছাত্রলীগের শত শত নেতাকর্মী, নিউ মার্কেট বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, গুলিস্তানও নয়—বরং সরাসরি এনসিপির অফিসের সামনে, যেটিকে অনেকে বাংলাদেশের তৃতীয় ‘পাওয়ার হাউস’ বলেন—সেখানে গিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে জটলা করল, দাঁড়িয়ে রইল, ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘শেখ হাসিনার সরকার বার বার দরকার’—এই ধরনের আওয়ামী লীগের স্লোগান দিতে লাগল। তারপর, যেন কিছুই হয়নি এমন ভঙ্গিতে, বীরদর্পে তারা চলে গেল।”
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ঢাকা শহরে যেভাবে হঠাৎ করে মিছিল-মিটিং বেড়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নামে যেগুলো হচ্ছে এবং যেসব মুখ সামনে আসছে—তাদের দেখে আমার কাছে তারা অপরিচিত মনে হয়। তাদের চেহারা দেখে আওয়ামী লীগের পরিচিত মুখ বলে মনে হয় না।’