নওগাঁর ধামইরহাটে পদত্যাগে বাধ্য করতে প্রধান শিক্ষক ও তার স্বামীকে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার উপজেলার খেলনা ইউনিয়নের রেড়িতলা একাডেমিতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্যাতনের শিকার প্রধান শিক্ষক ও তার স্বামীকে উদ্ধার করে।
উদ্ধারের পর স্বামীসহ প্রধান শিক্ষক জিন্নাতুন পারভীন ডলিকে গতকাল রাত ৮ টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর পরিস্থিতি বেগতিক দেখে চিকিৎসকরা তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন।
নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীরা হলেন- রেড়িতলা একাডেমির প্রধান শিক্ষক জিন্নাতুন পারভীন (ডলি) ও তাঁর স্বামী আড়ানগর ইউনিয়নের পলাশবাড়ী চিমুনিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) আশরাফুল হক।
ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাহাউদ্দীন ফারুকী বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনকে নিয়ে থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা স্বামীসহ প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে। তবে এখন পর্যন্ত ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক জিন্নাতুন পারভীন (ডলি) বলেন, গতকাল সকালে নিজ কর্মস্থল বেড়ীতলা একাডেমিতে গেলে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী (কম্পিউটার) শিক্ষক কাওছারের নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক আমার পদত্যাগের জন্য চাপ দিতে থাকে। আমি পদত্যাগ করতে না চাওয়ায় একটি বিদ্যালয়ের কক্ষে দড়ি দিয়ে বেঁধে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাকে নির্যাতন করা হয়। এই ঘটনায় আমার স্বামী এগিয়ে এলে তাঁকেও আমার সঙ্গে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়।’
প্রধান শিক্ষকের স্বামী আশরাফুল হক বলেন, হামলাকারীরা আমার গোপনাঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করেছে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত রেড়িতলা একাডেমির সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) কাওসারের মোবাইল ফোন করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমা খাতুন জানান, এক সপ্তাহ আগে রেড়িতলা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত সোমবার এ বিষয়ে গঠিত কমিটি তদন্ত করছে। কিন্তু বুধবার সকালে প্রধান শিক্ষক স্কুলে গেলে পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে বলে জেনেছি। পরে এ বিষয় জানতে পেরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভুক্তভোগীদের পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় উদ্ধার করা হয়েছে।