জানা যায়,‘ঈদুল আজহার সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনি হলের বেশিরভাগ ছাত্ররা বাড়িতে চলে গেছে। তখন হলে ছিলেন হাতেগোনা কয়েকজন। যাদের মধ্যে ছিলেন হুমায়ুন ফরিদিও। তারা সদলবলে গেলেন প্রয়াত অধ্যাপক কলিমুল্লাহর বাসায়। হুমায়ুন ফরিদি গিয়ে বললেন, ‘স্যার! আমরা কয়েকজন ছাত্র হলে আছি, কুরবানির ঈদ স্যার, আমাদের একটা গরুর ব্যবস্থা করে দেন কুরবানি উপলক্ষে। আমরা হলে ছাত্ররা খাব।’
‘আমরা ২০-২২ জনের মত আছি স্যার, বললেন ফরিদি।
‘তাহলে তোমাদের গরু লাগবে না, এক কাজ কর, আমি খাসির ব্যবস্থা করছি তোমাদের জন্য।’
এই যাত্রায় একরকম হতাশ হয়েই ঐ শিক্ষকের বাসা থেকে বের হচ্ছিল তারা। তখনই শিক্ষকের বাসার বাইরে কুরবানির জন্য কিনে এনে রাখা কালো গরুটা নজরে পড়ল। চোখে চোখে ইশারা হয়ে গেল ফরিদির সঙ্গে বাকি সবার। সেদিন রাতেই গরু চুরি করে নিয়ে আসা হলো। সকালে সাভার থেকে কসাই আসলেন। দেড় মণের মত মাংস হলো। ফরীদি কসাইকে বললেন, ১৫ কেজির মতো রান্না করতে। আর বাকিটা রেখে দিতে হবে।
এদিকে সকাল বেলায় নিজের গরু না পেয়ে অধ্যাপক কলিমুল্লাহর চক্ষু চড়কগাছ। উপায় না দেখে সকালেই নয়ারহাট থেকে গরু কিনে আনলেন। আর হলের ছেলেদের কাছে খবর পাঠালেন, ‘তোমরা আমার বাসায় এসে সেমাই খেয়ে যেও।’
সেমাই খেতে যাওয়া বালকেরা খালি হাতে গেল না। বেঁচে যাওয়া গরুর মাংস সব নিয়ে গেল স্যারের বাসায়। স্যার বললেন, ‘এগুলা কী?’
ফরিদি মুচকি হেসে বললেন, ‘আমরা স্যার একটা গরু কিনেছিলাম, আমাদের খাওয়া শেষ, তাই ভাবলাম বাকিটা আপনার জন্য নিয়ে আসি।’
স্যার সব বুঝে গম্ভীর মুখে বললেন- ‘হ্যাঁ হ্যাঁ! বুঝলাম! রাখো এই মাংস, আর খেতে বসো।’